মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শিশুর জীবনে সফলতার জন্য ১৮ শিক্ষা দিন: -মো: খায়রুল আলম


শিশুকে এমন শিক্ষা দেওয়া উচিত যা তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে এবং তার জীবনে সফলতা আনবে। আর এজন্য কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে। এ লেখায় তুলে ধরা হলো তেমন কিছু শিক্ষা-
 ১. টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমানে শিশুরাও প্রচুর সময় ব্যয় করে। তবে এ সময় যেন দৈনিক এক ঘণ্টার            বেশি না হয় সেজন্য শিক্ষা দিন। 
 ২. প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি পাঠ্যবই বহির্ভূত বই পড়তে দিন এবং এক পাতা সারাংশ লেখা অভ্যাস করান। 
৩. সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য শারীরিক অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ কারণে প্রতিদিন অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট 
      দৌড়াদৌড়ি বা এ ধরনের খেলাধুলা করতে দিন। 
৪. শিশুর আদর্শ ভবিষ্যৎ জীবন কেমন হবে সে সম্পর্কে লিখতে দিন।
৫. শিশুকে প্রতি সপ্তাহের, মাসের, বাৎসরিক ও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করা ও নিয়মিত তার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা          শেখান। এটি তাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য তাড়া করতে শেখাবে। 
৬. তাকে জনহিতকর কাজ করতে শেখান।
 ৭. শিশুকে সঞ্চয় করতে শেখান। 
৮. যে কোনো দরকারে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকার বিষয়টি শিশুকে শেখানো খুবই প্রয়োজনীয়। ভবিষ্যতে সে যেন 
     কোনো বিপদে পড়লে তাদের সহায়তা নেয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন। এছাড়া অন্য কারো বিপদে যেন সে পাশে 
       দাঁড়ায় তাও শেখাতে হবে।
 ৯. যে কোনো বিষয়ে কারো কাছে উপকৃত হলে ধন্যবাদ দেওয়া শেখান। এছাড়া অন্যান্য ভদ্রতাও শেখাতে হবে। 
১০. শিশুর ভুল হতেই পারে। আর সে ভুলগুলোতে সে যেন হতাশ না হয় সেজন্য তাকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে হবে। ভুল 
      মেনে নেওয়ার পাশাপাশি এক ভুল যেন বারবার না হয় সেজন্যও তাকে সতর্ক হওয়ার শিক্ষা দিন। 
১১. রাগ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এ বিষয়টি ছোটবেলা তেকেই তাকে শেখাতে হবে। এজন্য বাবা- মায়েরও           রাগ প্রকাশে সংযত হতে হবে। কারণ বাবা-মায়ের থেকে সে এ ধরনের অনেক বিষয় শেখে। 
১২. আর্থিক বিষয়গুলো শিশুকে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দিন। আর্থিকভাবে সফল হওয়ার উপায়গুলো তাকে জানিয়ে          
      রাখুন। কিভাবে আর্থিক ব্যবস্থা কাজ করে তা শিশুকে শিক্ষা দিন। 
১৩. শিশুর সঙ্গে মুখোমুখি আলাপে নানা বিষয় নিয়ে আসুন। এক্ষেত্রে ফোন বা অন্য কোনো মাধ্যম খুব একটা কার্যকর নয়। ১৪. সময় ব্যবহারের বিষয়টি শিশুকে শিক্ষা দিন। দৈনিক কাজের তালিকা তাকেই তৈরি করতে দিন। এটি তাকে মেনে 
      চলার উপায় জানান| 
১৫.বিভিন্ন শিক্ষামূলক স্থান পরিদর্শন করান এবং তাদের সামনে সমাজের বড় মানুষদের অবদান এবং জীবনী তুলে ধরুন 
    এবং দেশের প্রতি ,মানুষের প্রতি সম্মান এবং ভালবাসা গড়ে তুলুন। 
১৬.শিশুদের সামনে কোনো নেগেটিভ বিষয় তুলে না ধরা এবং নেগেটিভ বিষয়টিকে পজিটিভ হিসেবে তার সামনে 
       উপস্থাপন করা।
১৭.শিশূর সামনে জ্ঞাণী,বড় মাপের মানুষদের জীবনী তুলে ধরুন।
১৮.প্রতিদিনে জীবন যাপন ও বিদ্যালয়ে সহপাঠীদের কাজকর্ম নিয়ে  ডায়েরী লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
                                                                                                                                                                                                                                                                    -মো: খায়রুল আলম

সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী : -মো: খায়রুল আলম

 

করোনা মহামারি চলাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষাথীগণ পড়াশুনা থেকে বিরত ।এমতাবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিছুটা হোম পরীক্ষার ব্যবস্থা করলেও অনেকে এটা ব্যবসা বলে উপহাস করেন।একজন শিক্ষাথীকে তো কৃষক বা অন্যকিছু বলা হয় না। তাই আমরা ভূলে যাই শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্য।এ বিষয়ে আমার কিছু ধারণা উপস্থাপন করলাম।

শিক্ষার্থী বলতে বুঝায় যারা শিখে তারাই শিক্ষার্থী । প্রকৃতির বিশাল বিদ্যালয়ে আমরা সবাই শিক্ষার্থী। দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম করতে গিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিখছি। কিন্তু শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী  বলতে বুঝি যারা শিক্ষার ক্যারিকুলাম,বিষয়বস্তু নিয়মতান্ত্রিকভাবে অধ্যয়ন করে তাদেরকে শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী বলে।

* ছাত্র-ছাত্রীর বৈশিস্ট্য :

     -সত্যবাদী   

    -নিয়মানুবর্তী   

     - অধ্যবসায়ী     

     - শৃঙ্খল   

     - যতœশীল    

   - পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন 

    - দায়িত্বশীল

*ছাত্র-ছাত্রীর পড়ার ধরণ:

     ১) কিছুটা উচ্চস্বরে  

    ২) মনোযোগ সহকারে  

    ৩) একনিষ্ঠভাবে/এদিক -ওদিক না তাকিয়ে  

    ৪) রিডিং পড়বে

   ৫) বানান করবে    

   ৬) অর্থ পড়বে   

  ৭) লিখবে (পাঠ ঠোঁটস্থ  বা মুখস্ত নয়,পাঠ আত্ত¡স্থ করতে হবে।)

* ছাত্র-ছাত্রী  ভালো ফলাফল করতে হলে থাকতে হবে:

    ১) পড়াশুনার নিয়ম/ পড়াশুনার রুটিন           

     ২) পড়াশুনার উপাদান     

    ৩)  পড়াশুনার পরিবেশ

* ভালো ছাত্র-ছাত্রী হওয়ার উপায়:

 ১) বাসায় রুটিন অনুযায়ী পড়াশুনা করা।       

 ২) নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া ।        

 ৩) ক্লাসে মনোযোগী হওয়া ।   

 ৪) প্রতিদিনের বাড়ির কাজ নিজে সুন্দরভাবে প্রতিদিন করা।  

 ৫) শিক্ষকের আলোচনা মনোয়োগ সহকারে শোনা এবং নোটস করা।

 ৬) সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং স্বাস্থ্যের প্রতি যতœশীল হওয়া । 

 ৭) সপ্তাহে যে কোনো একদিন গল্প,উপন্যাস এবং চিত্র অঙ্কন করার অভ্যাস করা।

 ৮) নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করা

 ৯) পাঠ না বুঝলে শিক্ষককে ভদ্রতার সহিত প্রশ্ন করা।

*  বিদ্যালয় শেষে শিক্ষার্থীর বাড়িতে করণীয়:

১) স্কুলথেকে বাড়ি ফেরার পর ইউনিফর্ম খুলে হাতমুখ ধৌত করে সামান্য বিশ্রাম নেয়া এবং হালকা খাবার খেয়ে টেবিলে 

        বসে বাড়ির কাজ সম্পন্ন করা।

২) একটি নির্দিষ্ট সময় টিভি দেখা,গল্প,উপন্যাস পড়া , পত্রিকা পড়া , চিত্র অঙ্কন করা এবং খেলাধূলা করা। যেহেতু 

     খেলাধূলার মাঠ নেই বা অনিশ্চিত পরিবেশ সেহেতু স্কিপিং রৌপ, হাত-পা নড়াচাড়ার  কৌশল অবলম্বন করা ভালো।

৩) পাঠ্যবই ভালোভাবে রিডিং পড়া,বানান করা,অর্থ বুঝা, কোন কিছু না বুঝলে বিষয়টি নোট করা এবং টিউটর/

      শিক্ষকের  নিকট উপস্থাপন করা।

৪)   বাসায় টিউটর থাকলে অবশ্যই টিউটরের পাঠ স্কুলের পাঠ থেকে এগিয়ে থাকবে ।

৫)  টিউটর না থাকাই ভালো কারণ টিউটর থাকলে শিক্ষার্থী আত্মœ নির্ভরশীল হতে পারে না। তবে গণিত ও ইংরেজির 

      বিষয়টি বিবেচনা যোগ্য।

* ছাত্র-ছাত্রীকে অবশ্যই সুস্থ থাকতে হলে পালনীয়:

     ১) ছাত্র-ছাত্রী সবচেয়ে ১ম পালণীয় ও করণীয় বিষয় হলো সুস্থ থাকা।

     ২) নিয়মিত ২ বার দাঁত ব্রাশ করা।(সকালে নাশতার পরে এবং রাতে ঘুমানোর আগে)

     ৩) সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কমপক্ষে ১-২ গøাস পানি পান করা ।

     ৪) খাওয়ার আগে ও পরে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত  ভালোভাবে ধৌত করা।

     ৫) পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি , ফলমূল,শাক-সবজি খাওয়া।

     ৬) নিয়ম মেনে ফলমূল খাওয়া।

     ৭) নিয়মিত গোসল করা এবং সবসময় পরিস্কার পোশাক পরিধান করা।

     ৮) পড়ার টেবিল,বই পত্র এবং বিছানা সবসময় পরিপাটি এবং পরিচ্ছন্ন রাখা।

     ৯) চকলেট,চিপস,চুইংগাম সহ ফার্স্টফুড জাতীয় খাবার এবং কোমল পানীয় যতদূর সম্ভব পরিহার করা।কারণ এগুলো 

        দাঁত ও ত্বকের ক্ষতি করে,দেহকে মোটা করে এবং বুদ্ধিবৃত্তি কমিয়ে দেয়। বাসি,পচা এবং বাহিরের খোলা খাবার 

         খাওয়া থেকে বিরত থাকা।

    ১০) প্রতিদিন অত্যন্ত এক Glass  লেবুর শরবত পান করা।

    ১১) ছোটবেলা থেকেই বয়স ভিত্তিক শরীর চর্চার প্রতি গুরুত প্রদান।

   ধন্যবাদ